স্বপ্নের বাতিঘর ‘বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়’, ছড়াচ্ছে আলো
ডেস্ক রিপোর্ট
সিলেট বিভাগজুড়ে অসংখ্য চা বাগান। আর এসব বাগানে অগণিত চা শ্রমিক। কিন্তু নানা দিক থেকে তারা এখনো অবহেলিত। শিক্ষা, চিকিৎসা, বেতন সব ক্ষেত্রেই প্রতিনিয়ত বৈষম্যের শিকার এসব চা শ্রমিক ও তাদের সন্তানরা। তাই তো তারা নিজেরাই উদ্যমী।
চা বাগানের দিক থেকে হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলা অনেকটা ভরপুর। পাহাড় বেষ্টিত চা বাগান অধ্যুষিত এ উপজেলায় বিভিন্ন উপজাতির বসবাস। এখানে সাঁওতাল, মুন্ডা, বাউরি, রায়, ব্যানার্জি, নাগপুরি, বাগদি, সবর সম্প্রদায়ের বসবাস। কিন্তু শিক্ষার দিক থেকে তারা অনেকটাই বঞ্চিত।
কিন্তু এ বঞ্চনা দূর করতে উদ্যোগ নেন কিছু তরুণ। মাত্র ১০০ টাকা করে অর্থতহবিল সংগ্রহ করে গড়ে তোলেন ‘বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়’। বিদ্যালয়টি এখন পেয়েছে নিজস্ব ভবন, জায়গা। পাচ্ছে বিভিন্ন বরাদ্দ। আর আলো ছড়াচ্ছে এলাকায়। তবে পায়নি এখনো বোর্ডের স্বীকৃতি।
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া চা বাগানেরই কিছু তরুণ মিলে গড়ে তুলেছেন তাদের স্বপ্নের এই প্রতিষ্ঠানটি। জনপ্রতি মাত্র ১০০ টাকা করে অর্থতহবিল দিয়ে প্রথমে দুই লাখ টাকা অর্থ সংগ্রহ করে শুরু হয় বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। ২০১৮ সাল থেকে শুরু হয়ে এখনো চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। শুরুতে কখনো খোলা আকাশের নিচে, কখনো বা কারো বারান্দায় চলছিল কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম।
বাগান থেকে উচ্চ বিদ্যালয় অনেক দূর, মাইলের পর মাইল হেঁটে অনেক ছেলে-মেয়েই পড়ালেখা করতে চায় না। আর সেকারণেই উদ্যমী প্রাণচঞ্চল এক ঝাঁক তরুণ এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেন। তারাই শুরু করেন স্বপ্নের বাতিঘরের যাত্রা। পরবর্তীতে বাগান পঞ্চায়েতের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ তাদেরকে দান করেছেন একশ শতক জায়গা। সেই জায়গার উপর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের, উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নানান সময় দিয়েছেন বরাদ্দ। ফলে গড়ে উঠেছে স্কুলের নিজস্ব ভবন।
সম্প্রতি স্কুলটি ঘুরতে গিয়ে দেখা গেছে, একদল চা শ্রমিকদের কোমলমতি সন্তানেরা পাঠগ্রহণ করছে। এই বাগানের সন্তান, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা বিনা পারিশ্রমিকে নিরলস ও নির্মোহভাবে পাঠদান করে যাচ্ছেন।
চারিদিকে সবুজের সমারোহ। পাহাড় টিলা এবং চা বাগান। সে এক অপরূপ দৃশ্য। নীল আকাশের নিচে দিগন্তজুড়ে খোলা মাঠ। চা-বাগানের কোল ঘেঁষেই ঠায় দাঁড়িয়ে আছে- বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়। কী অপরূপ, কী অসাধারণ। মন ভুলিয়ে যাওয়ার মতো একটি স্থান। সেখানেই শ্রমিকরা অন্তরাত্মায় লালন করছেন বঙ্গবন্ধুকে, তার আদর্শকে। তাদের কষ্টার্জিত অর্থে গড়ে তোলা এই প্রতিষ্ঠানের নামকরণের মধ্য দিয়েই বোঝা যায় বঙ্গবন্ধুর প্রতি তাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার গভীরতা।
চা শ্রমিক অনিল বারইকে বঙ্গবন্ধুর নামে নামকরণ প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসি, আমাদের জন্য বঙ্গবন্ধুই একমাত্র আদর্শ। তাই পরবর্তী প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুকে জানার, বোঝানোর এবং অনুধাবন করার চিন্তা থেকেই আমরা এই প্রতিষ্ঠানের নাম করেছি, বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়।
জানা যায়, এই বিদ্যালয়ে প্রতি বছর নানান ধরনের অনুষ্ঠান হয়। এসব অনুষ্ঠানে চা শ্রমিকের সন্তানরা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে উপস্থাপন করে আমন্ত্রিত অতিথিদের সামনে। তাদের নিজের শৈশব স্মৃতি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, উপজাতি সংস্কৃতি খুব সুন্দর করেই তারা লালন করছে এবং ধারণ করছে প্রতিনিয়ত।
প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক রনি গোয়ালা জানান, বর্তমানে পাঠদান কার্যক্রম ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চলছে। প্রায় দুই শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী অধ্যয়ন করছে।
তিনি আরো জানান, এখন পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানটি বোর্ড কর্তৃক পাঠদান কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক অনুমতি পায়নি। বিষয়টি তারা খুব একটা ভালো বোঝেন না তাই তারা শিক্ষা বোর্ডের আনুকূল্য আশা করছেন।
সম্প্রতি এই প্রতিষ্ঠানটি দেখতে যান সিলেট বিভাগের শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নুরুল হক। তিনি বলেন, এরকম একটি জায়গায়, এমন করে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা কষ্টকর ও কঠিন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মানবিক ও উপজাতীয় কোটায় গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় আনা দরকার। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করতে যেকোনো পরামর্শে আমি তাদের পাশে থাকবো।
এদিকে যেসব শিক্ষার্থী এখানে অধ্যয়ন করে তারা কেউ কোনো রকম অর্থ দেয় না। যে কারণে শিক্ষকরাও কোনোরকম সম্মানী গ্রহণ করতে পারেন না। বাগানের উচ্চশিক্ষিত, অধ্যয়নরত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছেন। তাদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, আমরা চাই, এই প্রতিষ্ঠানটি সরকারের দৃষ্টিতে আসুক। এক সময় এই প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রের কাজ করবে। যেটা আমরা করছি।
অপরদিকে সচেতন মহল মনে করছে, শত প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে ক্রমাগত সামনে এগিয়ে চলা স্বপ্নের বাতিঘর ‘বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়’ পিছিয়ে পড়া চা শ্রমিক সন্তানদের জীবনমান উন্নয়নে এবং সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটি অন্যতম মাধ্যম হতে পারে। এজন্য বিদ্যালয়টির প্রতি সবার সদয় দৃষ্টি প্রয়োজন।
- বঙ্গবন্ধু রেল সেতুতে ৪৮ নম্বর পিলারের কাজ সম্পন্ন
- পদ্মাসেতু: বিজয়ের মাসেই সম্পন্ন হচ্ছে জয়েন্ট মুভমেন্টের ঢালাই কাজ
- পাথরবিহীন রেললাইন বসানো হচ্ছে
- এবারও ভালো করেছে মেয়েরা
- প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড
- ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের অগ্রগতি ৯৯ শতাংশ, উদ্বোধন মার্চে
- প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে পদ্মা সেতু নিয়ে লিখবে শিক্ষার্থীরা
- মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়লেন তারা!
- ১০ টাকায় এনআইডি সেবা পাবে সাধারণ মানুষ!
- বিএনপি নেতা ফখরুলের ভিডিও বার্তা নিয়ে বিতর্ক তুমুলে
- বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ব্যবহার করছে তুরস্ক-ফিলিপাইনসহ বিশ্বের ৬ দেশ
- সেনাপ্রধানের নির্দেশনা মেনে করোনা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে সেনাবাহিনী
- বাস্তবায়নের পথে ব-দ্বীপ স্বপ্ন
- ট্রেনে সাড়ে ৩ ঘণ্টায় কলকাতা থেকে পৌঁছানো যাবে ঢাকা
- বিশাল কর্মযজ্ঞ শেষের পথে
‘স্বাধীনতা আন্দোলনের পেছনে অন্যতম কারণ ছিল অর্থনৈতিক মুক্তি’
‘জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে’
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাস
উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন : পরিবেশমন্ত্রী
এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন
ইসরাইলি গণহত্যা নিয়ে প্রতিবেদন করে হুমকির মুখে জাতিসংঘ কর্মকর্তা
সোমালিয়ায় জিম্মি জাহাজ উদ্ধার নিয়ে যা জানালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
৭০ হাজার সরকারি কর্মী ছাঁটাই করবেন আর্জেন্টিনার নতুন প্রেসিডেন্ট
স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
‘সাড়ে আট হাজার ডাকঘর `স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্টে` রূপান্তরিত হবে’
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ইউএন ওমেনের প্রতিনিধি
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে : ঢাকাবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার
ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে ভারতের সহযোগিতা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
‘জলবায়ু সহিষ্ণু সমাজ গঠনে নারীরা শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে পারে’