Banglar Unnoyon :: বাংলারউন্নয়ন.নেট

গৃহহীনদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০ কোটি টাকা ব্যক্তিগত অনুদান

নিউজ ডেস্ক

বাংলারউন্নয়ন.নেট কম

প্রকাশিত : ১২:০৮ এএম, ৪ মে ২০২১ মঙ্গলবার

করোনাভাইরাস মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র, অসহায় মানুষের সহায়তার জন্য 'জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট' এর পক্ষ থেকে সরকারকে ৫ কোটি টাকা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এছাড়া এই ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুনর্বাসনের জন্য আশ্রয়ন প্রকল্পে আরও ৫ কোটি টাকা দিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, “এই ১০ কোটি টাকা বঙ্গবন্ধুকন্যা ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রদান করেছেন। সমাজের বিত্তশালীদেরকেও দরিদ্র ও দুস্থ মানুষের সহায়তায় এভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।”

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়, সরকারের ‘করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য সহায়তা তহবিল’ এবং ‘হাউস কনস্ট্রাকশন ফান্ড বাই প্রাইভেট ফাইন্যান্স’ নামে দুটি আলাদা তহবিলে এই অর্থ দিয়েছেন শেখ হাসিনা।

আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মাহবুব হোসেন বলেন, সারাদেশে ভূমিহীন, গৃহহীন মানুষকে ঘর তৈরি করে দেওয়ার জন্য সরকার যে উদোগ নিয়েছে, তার পাশপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগেও যেন মানুষ এগিয়ে আসতে পারে সেজন্য আশ্রয়ন প্রকল্প থেকে একটি তহবিল গঠন করা হয়। সেই তহবিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম ৫ কোটি টাকা দিলেন।

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে লকডাউনে আয় হারানো, দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষকে সহায়তা প্রদান করে তাদের পাশে আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশপাশি মুজিববর্ষে দেশের কোন মানুষ গৃহহীন,ভূমিহীন থাকবে না সরকারের এই ঘোষনা বাস্তবায়নে শেখ হাসিনার নির্দেশে কাজ অব্যাহত রয়েছে।

করোনাভাইরাস মহামারীতে অসহায় মানুষকে সহায়তার অংশ হিসেবে রোববার সকালে ৩৬ লাখ ৫০ হাজার নিম্ন আয়ের অসহায় মানুষকে মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন সরকারপ্রধান।

আগামী তিন দিনের মধ্যে এই নিম্ন আয়ের অসহায় দরিদ্র মানুষেরা প্রত্যেকে আড়াই হাজার টাকা করেন পাবেন।

মহামারীর প্রথম পর্যায়েও প্রধানমন্ত্রী সাড়ে ৩৬ লাখ মানুষকে নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছিলেন। এবারও তার নির্দেশে সেই সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

তার কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এর আগে জানিয়েছিলেন, মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ যখন আসে, প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দেন।

গত ১৪ এপ্রিল থেকে দেশে দ্বিতীয় পর্যায়ে কঠোর লকডাউন শুরু হলে সারাদেশের প্রতিটি এলাকাতেই বিভিন্ন শ্রেণি পেশার শ্রমজীবী মানুষ ও প্রান্তিক জনপদের মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিক ৫৯০ কোটি টাকা মাঠ পর্যায়ে বিতরণ করেছে। এই কার্যক্রম এখনও চলছে বলেন তার সচিব।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রী তার ত্রাণ তহবিল থেকে দরিদ্র, ছিন্নমূল মানুষের সহায়তার জন্য জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে আরও ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা দিয়েছেন। এমনকি গণমাধ্যমকর্মীদের সহায়তার জন্যও প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে ১০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন।

এছাড়া হাওর এলাকায় ধানকাটা শুরু হওয়ার সাথে সাথে বাংলাদেশের বিভিন্ন জনপদ থেকে যে সমস্ত শ্রমিক ওইসব এলাকায় ধান কাটতে যান, তাদের সেখানে নিয়ে যেতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করার নির্দেশও সরকার প্রধান দেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, হাওর অঞ্চল, বিশেষ করে কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, নেত্রকোণা জেলায় হাওরের বোরো ধানা কাটার জন্য শ্রমিক সরবরাহসহ ধান কাটা, ধান মাড়াই কাজ যাতে সময়মত ও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করা যায়, সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে হাওর অঞ্চলসহ সারাদেশে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষকলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ধান কাটা, ধান মাড়াইয়ের কাজে অংশ নিচ্ছেন।

দরিদ্র, অসহায় মানুষকে মানবিক সহায়তা দেওয়ার পাশপাশি সমাজের যারা কারো কাছে হাত পাততে পারেন না, কিংবা সহায়তা চাইতে পারেন না, তাদের পাশে থাকার জন্যও জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা।

এছাড়া সারাদেশে শহর এলাকায় নিম্নবিত্ত মানুষের মাঝে প্রতিদিন ৫০০ ট্রাকের মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে ভোজ্যতেল, চিনি, ডাল, ছোলা, খেঁজুর, পেঁয়াজ সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি করছে টিসিবি।

তাতে প্রতিদিন আট লাখ মানুষ উপকার পাচ্ছে জানিয়ে মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, গত এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এই কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে ২ কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষ উপকৃত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, সারাদেশে সকল মানবিক সহায়তা কার্যক্রমসহ করোনাভাইরাস মোকাবেলার সার্বিক বিষয় তিনি নিয়মিত তদারকি করছেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিচ্ছেন।

সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানার পর প্রায় ১ কোটি ২৪ লাখ ৪২ হাজার নিম্নবিত্ত পরিবারের জন্য অর্থ বরাদ্দের কথা তুলে ধরে বাংলা নববর্ষের আগের দিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, “আপনাদের শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। সরকার সব সময় আপনাদের পাশে রয়েছে।”