Banglar Unnoyon :: বাংলারউন্নয়ন.নেট

কথা রাখলেন `শেখের বেটি` শেখ হাসিনা

মো. আল আমিন টিটু, ভৈরব

বাংলারঅর্জন.কম

প্রকাশিত : ০৩:৫৭ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ মঙ্গলবার

‘কথা রাখলেন, শেখের বেটি- শেখ হাসিনা’। তার কথা মতো, মাত্র ১০ টাকা কেজি দরে মিলছে চাল। বছরের প্রথম ও শেষের দিকে গ্রামের হতদরিদ্র মানুষের ঘরে যখন সাময়িক খাদ্য সংকট দেখা দেয়, ঠিক তখনই স্বল্প মূল্যে এই চাল পেয়ে আনন্দিত হত দরিদ্র মানুষগুলো। 

জানাগেছে, বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনীয় ইশতেহারে এই দেশের মানুষকে তিনি ১০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়ানোর ঘোষণা দেন। তার, এই ঘোষণার পর থেকে সারা দেশের ন্যায় কিশোরগঞ্জের ভৈরবেও হতদরিদ্রদের মাঝে স্বল্প মূল্যে চাল বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বছরের প্রথম দিকে ২ মাস এবং শেষের দিকে ৩ মাস এই চাল বিক্রির কার্যক্রম চলে। 

ভৈরব খাদ্য অফিসের মতে, উপজেলার আগানগর, শিমুলকান্দি, শ্রীনগর, গজারিয়া, সাদেকপুর, কালিকাপ্রসাদ ও শিবপুরসহ ৭টি ইউনিয়নে মোট ১৪জন ডিলারের মাধ্যমে হতদরিদ্রদের মধ্যে এই চাল বিক্রি করা হচ্ছে। সপ্তাহে ৩দিন সকাল থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এবং মাসে ১২ দিন এই চাল বিক্রি করছেন তারা। জন প্রতি ৩০ কেজি করে, মাসে একবার এই চাল নিচ্ছেন কার্ডধারীরা। উপজেলার প্রায় ৫ হাজার ২শ’ জন কার্ডধারী এই সুবিধার আওতায় রয়েছেন। 

মাত্র ১০ টাকা কেজিতে চাল পেয়ে গজারিয়া ইউনিয়নের বাশঁগাড়ী গ্রামের সুবিধাভোগী হারুন মিয়া বলেন, খেটে খাওয়া মানুষ আমরা। শেখ হাসিনার কথা মতো অসময়ে নাম মাত্র মূল্যে চাল পেয়ে আমরা খুবই খুশি।

জানতে চাইলে গজারিয়া ইউনিয়নের ডিলার আব্দুস সালাম শাহারিয়ার বলেন, তার অধিনে ৩ শতাধিক কার্ডধারী মাসে একবার ৩০কেজি করে চাল নিচ্ছেন। তার দারি, গ্রামে হতদরিদ্র লোকের সংখ্যা অনেক বেশি। সে তুলানায় তালিকায় নামের সংখ্যা সীমিত। তাই নামের সংখ্যা বাড়ানো খুবই প্রয়োজন।

কথা হয় আরেক সুবিধাভোগী শ্রীনগর ইউনিয়নের বধুনগর গ্রামের রহিমা বেগমের সাথে, এসময় তিনি বলেন, হাসিনা সরকার, তার কথা রাখছেন। বছরে ৫মাস আমরা ১০ টাকা কেজিতে চাল খেতে পারছি। তাই, তিনি আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেবেন। 

এদিকে অনিয়মের অভিযোগে সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষ গেল জুনে শিবপুর ইউনিয়নের মো. সাদেক মিয়া নামে একজনের ডিলারশীপ বাতিল ও মিজানুর রহমান নামে অপর ডিলারকে চলতি মাসের ১৩ সেপ্টেম্বর আটক করেছে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা। ফলে এই এলাকাটিতে বর্তমানে চাল বিক্রির কার্যক্রম কিছুটা গতি হারিয়েছে। তাছাড়া যেসব ইউনিয়নের চাল বিক্রি করা হচ্ছে, ওই সব এলাকার অধিকাংশ ডিলারদের বিরোদ্ধে কেউ কেউ ওজনে কম দেয়ারও অভিযোগ করেন।

ওজনে কম দেয়া প্রসঙ্গে শিমুলকান্দি ইউনিয়নের ডিলার আব্দুল্লাহ মিয়ার এক সহকারী বলেন, এক দাড়িপাল্লা থেকে আরেক দাড়িপাল্লায় মাপলে ওজনে কিছুটা এদিক- সেদিক হতেই পারে। 

এছাড়াও তালিকায় অনেক স্বচ্ছল পরিবারের নাম রয়েছে। আবার সমাজের প্রকৃতপক্ষে অস্বচ্ছল এমন অনেকের নাম বাদ পড়েছে এবং বঞ্চিত হয়েছেন বলে মনে করেন সুশীল সমাজের লোকজন। এমনই একজন উপজেলার শিমুলকান্দি ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামের বাসিন্দা বিধবা নারী রিনা বেগম। এক কন্যা সন্তানের জননী রিনা বেগম বলেন, গত ১৫ বছর আগে তার স্বামী মারা গেছেন। খুব কষ্ঠে তিনি দিনাতিপাত করছেন। যখন শুনেছেন ১০ টাকা কেজিতে চাল পাবেন। তখনই ছুটে যান ডিলারের কাছে। কিন্তু, তালিকায় নাম না থাকায়, চাল পাননি তিনি।

তালিকায় নাম বাদ পড়তেই পারে বলে মনে করেন শিমুলকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান যোবায়ের আলম দানিস। তার মতে, গ্রামে হতদরিদ্র লোকের সংখ্যা বেশি। তাই, সবার নাম তালিকায় দেয়া সম্ভব হয়নি। তবে, আগামীতে সুযোগ পেলে অবশ্যই বাদ পড়াদের নাম তালিকায় অšর্ন্তূক্ত করা হবে।

ভৈরব উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার ২শ’ জন কার্ডধারীর মধ্যে ১শ’ ৫৩ টন চাল বিতরণের কার্যক্রম চলেছে বলে নিশ্চিত করেন উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ খোরশেদ আলম। 

তিনি আরও বলেন, কোথা যেনো কোনো ধরনের অনিয়ম না হয়। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজাগ রয়েছেন। এছাড়াও অনিয়মের অভিযোগে ইতিমধ্যে একজনের ডিলারশীপ বাতিল করা হয়েছে।