শনিবার   ২৫ মার্চ ২০২৩

সর্বশেষ:
১০ উইকেটের রেকর্ড জয়ে সিরিজ বাংলাদেশের রোজায় ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রের মাধ্যমে বিক্রি হবে গোশত-দুধ-ডিম
৫০৬

এক সংকল্প আর আত্মমর্যাদার নাম পদ্মা সেতু

সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা

প্রকাশিত: ২৬ মে ২০২২  

অবশেষে একটা তারিখ পাওয়া গেলো– ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পরই সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। পদ্মা সেতুর নাম পদ্মা নদীর নামেই থাকছে, যদিও বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে নানা নামের প্রস্তাব উঠেছিল।

আমি নিজেও বলেছিলাম ‘বিজয় সেতু’ রাখা যেতে পারে, কারণ এ সেতু বানাতে লড়াই করতে হয়েছে এবং সেই লড়াইয়ে বিজয় অর্জিত হয়েছে। এই সেতু নির্মাণকে ষড়যন্ত্রের ফাঁকে আটকানোর চেষ্টা হয়েছে এবং সেই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীকে লড়াই করতে হয়েছে দৃঢ়তা নিয়ে। অথবা হতে পারতো ‘জয়বাংলা সেতু’, যে শ্লোগানে দেশ স্বাধীন হয়েছিল। যাইহোক, নদীর নামে সেতু হওয়াই বেশিরভাগ মানুষের কাছে যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে, কারণ এ নাম ছড়িয়ে পড়েছে দেশ দেশান্তরে।

আমাদের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নপূরণ হতে যাচ্ছে। কিন্তু এটি শুধু সেই অঞ্চলের মানুষ নয়, উপকার করবে সারাদেশের মানুষের।  পদ্মা বহুমুখী সড়ক-রেল সেতু যা বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হলো। সেতুটি মুন্সীগঞ্জকে শরীয়তপুর এবং মাদারীপুরের সাথে সংযুক্ত করছে, এবং দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সংযুক্ত করছে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং উন্নয়ন প্রকল্প এই সেতু। পদ্মা নদী পৃথিবীর উত্তাল বা খরস্রোতা নদীগুলোর মধ্যে একটি। এত উত্তাল নদীর ওপর সেতু নির্মাণ তো চ্যালেঞ্জিং ছিলই, কিন্তু বেশি ছিল অ-কারিগরি চ্যালেঞ্জ।  সরকার যখন প্রকল্পটি হাতে নিল সবাই তখন উদ্বেলিত। কিন্তু অনেকেই খুশি নয়। শাসক দলের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ‘সেতু হবে না’, ‘করতে পারবে না’, ‘আমরা ক্ষমতায় গেলে দুটি পদ্মা সেতু করবো’, এসব কথাও বলেছিলেন। তবে বাংলাদেশের মানুষ এই প্রকল্পকে স্বাগত জানিয়েছে অন্তর থেকে, কারণ  সেতুটা হলে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাটাই বদলে যাবে। এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত ছোঁয়া যাবে হাওয়ার বেগে, নদী আর পথ রুখতে পারবে না। এমন একটি প্রকল্পে যুক্ত থাকার জন্য নিজ থেকেই এগিয়ে এসেছিল বিশ্বব্যাংক। এমন একটা ঐতিহাসিক কাজে তাদের ছিল ব্যাপক আগ্রহ। আর্থিক সাহায্যের হাতও ছিল উন্মুক্ত। স্বপ্নের সেতু নির্মাণ শুরু হলো। কিন্তু আচমকা ছেদ। বিশ্বব্যাংকের ঘোষণা, তারা সাহায্য করতে অপরাগ। প্রথম প্রথম কোনও কথা বলেনি বিশ্বব্যাংক। তবে ধীরে ধীরে মুখ খুলে বললো, দুর্নীতি হয়েছে, তাই তারা এখানে থাকবে না।

বাংলাদেশেরই কিছু খ্যাতনামা ব্যক্তি ও গণমাধ্যমও সুর মেলায় এই দাতা সংস্থার সঙ্গে। হতাশ হয়ে পড়েন দক্ষিণাঞ্চলসহ গোটা দেশের মানুষ। বিব্রত সরকার। পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ওঠার পর তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে মন্ত্রিপরিষদ থেকে বাদ দেওয়া এবং যোগাযোগ সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনাও ঘটেছিল। কিন্তু সরকারের অবস্থান ছিল দৃঢ়। সরকার প্রমাণ চায়। বিশ্বব্যাংক ছেঁড়া ছেঁড়া কিছু অভিযোগ তুললো। এতে বড় কিছু প্রমাণ হয় না। পদ্মা সেতু থেমে রইলো না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ঘোষণা করলেন, পদ্মা সেতুর কাজ যেমন চলছে, তেমনই চলবে। বিশ্বব্যাংকের সাহায্যের দরকার নেই। বাংলাদেশ নিজের টাকায় এ কাজ করবে। কথাটা বিশ্বাস করেনি বিশ্বব্যাংক, অন্যান্য দাতা সংস্থা এবং এদেশের কিছু মানুষ। তাদের ভাবনায় ছিল এটি অসম্ভব। তারা বুঝতে পারেনি শেখ হাসিনার সরকারের সক্ষমতা। শেখ হাসিনা শক্ত হাতে হাল ধরলেন পদ্মা সেতুর এবং নির্মাণ কাজ দুর্বার গতিতে চলে আজ এই সেতু বাস্তব।

সেতু সম্পূর্ণ হয়েছে। তবে বাংলাদেশের বিজয় হয়েছে অন্য এক জায়গায়ও। কানাডার আদালতে দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারেনি বিশ্বব্যাংক। মামলা বাতিল করে দিল আদালত, কারণ এর কোনও সারবত্তা নেই। অবশেষে লজ্জার মাথা খেয়ে বাংলাদেশের প্রশংসায় মাতলো বিশ্বব্যাংক। তাই এই সেতু এক বিজয়ের নাম, এক সংকল্পের নাম, এক আত্মবিশ্বাসের নাম এবং আত্মমর্যাদার নাম।

পদ্মা সেতু নিয়ে যে সকল রাজনীতিকে পরাজিত করা হয়েছে। এর অর্থনৈতিক উপকারিতার কথা ভাবলে প্রথমেই যে কথা আসবে তা হলো মানুষ ও জনপদের সংযোগ। দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ ২ থেকে ৪ ঘণ্টা কমে যাবে।

রাজধানীর সাথে সরাসরি যোগাযোগের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার, কাঁচামাল সরবরাহ এবং শিল্পায়ন সহজ হবে। একুশটি জেলায় গড়ে উঠবে ছোট-বড় শিল্প। কৃষির ব্যাপক উন্নতি হবে। কৃষকরা পণ্যের দাম ভালো পাবেন এবং ফলে উৎপাদন বাড়বে। বলা হচ্ছে দক্ষিণের জেলা সমূহের বার্ষিক জিডিপি ২.০ শতাংশ এবং দেশের সামগ্রিক জিডিপি ১.০ শতাংশের বেশি বাড়াতে সাহায্য করবে পদ্মাসেতু। 

সেতুটি নির্মাণের ফলে দেশের দক্ষিণাঞ্চল ট্রান্স-এশিয়ান হাইওয়ে ও ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে সংযুক্ত হবে। ফলে ভারত, ভুটান ও নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক যোগাযোগ সহজ হবে।  সেতুর দুই পাশে গড়ে তোলা হবে অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাইটেক পার্ক ও বেসরকারি শিল্প শহর। ফলস্বরুপ, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়বে। এবং পর্যটন শিল্পের বিকাশে বড় আবদান রাখবে এই সেতু।  দক্ষিণাঞ্চলের কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত, সুন্দরবন, ষাট গম্বুজ মসজিদ, টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজার, মাওয়া ও জাজিরায় পুরনো-নতুন রিসোর্টসহ নতুন-পুরনো পর্যটনকেন্দ্র দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে শুরু করবে শিগগিরই।

পদ্মা সেতু নির্মাণ দেশকে নিয়ে গেলো এক অন্য উচ্চতায়। নিজের অর্থায়নে এত বিশাল সেতু নির্মাণ করায় ধীরে ধীরে আরও অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিজ অর্থেই সম্পন্ন করার ভিতটা সৃষ্টি হলো। আমাদের প্রকৌশলী, কারিগরি কর্মী প্রত্যেকের জন্য এই সেতু উপহার দিল আস্থা, সক্ষমতা ও দৃঢ় মনোবল।
লেখক: সাংবাদিক  

আরও পড়ুন
সাক্ষাৎকার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
  • পানির নিচে পারমাণবিক হামলায় সক্ষম ড্রোন তৈরি করলো উত্তর কোরিয়ার

  • জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদে জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করছি: আইজিপি

  • গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

  • কমতে শুরু করেছে ব্রয়লারের দাম

  • প্লেনারি অধিবেশনে সভাপতিত্ব করলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

  • ৪ লাখ ২০ হাজার প্রি-পেইড গ্যাস মিটার কিনছে সরকার

  • আজ উদ্বোধন : হাওড়ে নান্দনিক বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ

  • পায়রার ভাঙন রোধে ৭৫১ কোটি টাকার প্রকল্প উদ্বোধন

  • ঈদের অর্থনীতি বড় হচ্ছে

  • রাত সাড়ে ১০টায় এক মিনিট অন্ধকার থাকবে পুরো দেশ

  • আমরা যুদ্ধ ও সংঘাত চাই না: প্রধানমন্ত্রী

  • শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সিক্ত হতে তৈরী জাতীয় স্মৃতিসৌধ

  • মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলো যুক্তরাষ্ট্র

  • সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যা পুনর্বাসনে ২৩ কোটি ডলার দিচ্ছে এডিবি

  • বগুড়ায় ইফতারে কদর বেড়েছে সাদা দইয়ের 

  • মানব সভ্যতার ইতিহাসে কলঙ্কিত এক দিন

  • গোপালগঞ্জে ৫ হাজার ৯০০ কৃষক পেল বীজ-সার

  • মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের কর্মসূচি

  • বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে নবনিযুক্ত সিআইসি আবদুল মালেকের শ্রদ্ধা

  • স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে নৌবাহিনীর জাহাজগুলো উন্মুক্ত থাকবে

  • গণহত্যা দিবসে জাতীয় কর্মসূচি

  • গাজীপুরে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ

  • বরগুনায় ল্যাপটপ পেল ১৩৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পতিত জমিতে সবজি চাষ

  • নিম্ন আয়ের মানুষের সাথে ইফতার করলেন মেয়র আতিক

  • রমজান উপলক্ষ্যে ১০ টাকা লিটার দরে দুধ বিক্রি করছেন এরশাদ

  • রমজানের প্রথম জুমায় মুসল্লিদের ঢল

  • সাহরির জন্য পেঁপে দিয়ে মুরগির মাংস রান্নার রেসিপি

  • ভয়াল সেই রাতের গল্পে ‘একটি দুঃস্বপ্নের রাত’

  • রমজানের রোজার উপকারিতা

  • আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে নগদ বাংলাদেশকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করেছে: পলক

  • বঙ্গবন্ধু টানেল প্রকল্পের অগ্রগতি ৯৬.৫ শতাংশ

  • ২৯ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে দেশের প্রথম ভূমি সম্মেলন: ভূমিমন্ত্রী

  • ‘বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো গভীর হয়েছে’

  • সামরিক সক্ষমতায় আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ

  • ১১০০ রোহিঙ্গাকে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে: পররাষ্ট্র সচিব

  • ঈদে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ৭ এপ্রিল

  • রোজায় ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রের মাধ্যমে বিক্রি হবে গোশত-দুধ-ডিম

  • ভারত থেকে পাইপলাইনে ডিজেল আজ থেকে

  • লাইসেন্স ছাড়া করা যাবেনা ধান-চালের ব্যবসা: খাদ্যমন্ত্রী

  • মেহেরপুরে গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে সজনে ডাটা

  • বগুড়ায় ইফতারে কদর বেড়েছে সাদা দইয়ের 

  • বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন, জ্বালানি তেলে আসছে সুদিন

  • মেয়াদ বাড়লো পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাট উন্নয়ন কাজের

  • দেশে স্বাস্থ্যসেবা দেবে সৌদি অর্থায়নের ভাসমান হাসপাতাল

  • ‘বঙ্গবন্ধুর কারণে আজ আবহাওয়া বার্তা আগে পাই’

  • এবার তৈরী হচ্ছে ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা ৩৬৯ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথ

  • স্পিকারের সাথে ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

  • চাঁদপুরে প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তা পেল  ১৪১ রোগী  

  • ৯৯৯-এ ফোন করে বলতে হবে না নাম-ঠিকানা-অবস্থান

  • উন্নয়নের মূলস্রোতে ফিরছে ভূমিহীন মানুষ

  • দেশের আকাশে রমজানের চাঁদ; শুরু হচ্ছে সিয়াম সাধনার দিন

  • ‘শিক্ষার্থীরা স্মার্ট নাগরিক হবে স্মার্ট শিক্ষার মাধ্যমে’

  • ১০ উইকেটের রেকর্ড জয়ে সিরিজ বাংলাদেশের

  • শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসায় নরেন্দ্র মোদি

  • এই রমজানে ঢাকাবাসী নিরবচ্ছিন্নভাবে পানি পাবে

  • বাংলাদেশ ভবিষ্যতে বিশ্বকাপ ফুটবলে খেলবে: প্রধানমন্ত্রী

  • এশিয়া কাপ আরচ্যারিতে স্বর্ণ জয় করলো বাংলাদেশ

  • হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হলো বাংলাদেশ

  • প্রধানমন্ত্রীর ঘরে খুশির জোয়ার