বাংলাদেশে ডিজিটাল অর্থনীতির রূপকার
শামীম আহসান
ডিজিটাল বাংলাদেশের শুধু স্বপ্ন দেখেই থেমে না থেকে তা বাস্তবায়নেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং অদূর ভবিষ্যতে আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি-নির্ভর সমৃদ্ধশালী জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন সজীব ওয়াজেদ। তিনি বিভিন্ন সময়ে বলেছেন, বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লব সাধিত হবে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের হাত ধরেই। তার এই আস্থা আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্নিষ্ট সব উদ্যোক্তা ও পেশাজীবীকে অনুপ্রাণিত করেছে দেশীয় মেধা ও সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে নতুন নতুন সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচনে ভূমিকা রাখতে।
বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য হিসেবে জীবনের প্রথমার্ধে অনেক চড়াই-উতরাই পাড়ি দিতে হয়েছে সজীব ওয়াজেদকে। তবে তা উচ্চশিক্ষায় সাফল্যের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। ভারতের বেঙ্গালুরু থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রি, যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট আর্লিংটন থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক এবং পরবর্তী সময়ে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে লোকপ্রশাসনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। অনেক আগেই ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম তাকে তরুণ বৈশ্বিক নেতা নির্বাচিত করেছিল। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র তিন মাসের মধ্যে তার অন্তর্বর্তিতায় জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালা প্রণীত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুপ্রেরণা ও দিকনির্দেশনা এবং সজীব ওয়াজেদের কর্মপরিকল্পনায় আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবতায় রূপ নিচ্ছে।
দেশকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে একটি ভিশন বাস্তবায়ন বা এর জন্য নীতিমালা প্রণয়নই যথেষ্ট নয়, এর সঙ্গে প্রয়োজন ব্র্যান্ডিং। সজীব ওয়াজেদ আমাদের আমন্ত্রণে সিলিকন ভ্যালি, নিউইয়র্ক, নরওয়ে, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশের টেক সামিটগুলোতে অংশ নিয়েছেন এবং বাংলাদেশকে তথ্যপ্রযুক্তিতে বিনিয়োগের সবচেয়ে আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড, ই-এশিয়ার মতো আয়োজনে বিদেশি নেতৃবৃন্দকে বাংলাদেশে নিয়ে এসে তিনি আমাদের সক্ষমতা ও সম্ভাবনাগুলো তুলে ধরেছেন। তিনি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাংলাদেশকে নিয়ে যে আস্থা তৈরি করতে পেরেছেন তার সুফল আমরা পেয়ে চলেছি। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় তার উপস্থাপনে মুগ্ধ হয়ে স্ন্যাপচ্যাটকে মাল্টিবিলিয়ন ডলারের আইপিওতে নিয়ে যাওয়া ইমরান খান বাংলাদেশে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেন। একইভাবে তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে পেগাসাস টেক ভেঞ্চারস, গোল্ডেন গেট ভেঞ্চারস, অ্যান্ট ফাইন্যান্সিয়াল, ডেফটা পার্টনার্স, ফাইভ হান্ড্রেড স্টার্টআপসসহ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে।
সজীব ওয়াজেদ বলে থাকেন, তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় নেতৃত্ব দিতে বাংলাদেশ থেকে গুগল, ফেসবুক, আমাজন, আলিবাবার মতো উদ্ভাবনী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তৈরি হতে হবে যার জন্য প্রয়োজন একটি শক্তিশালী স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম। এই লক্ষ্যে তিনি ২০১৬ সালে 'স্টার্টআপ বাংলাদেশ' উদ্বোধন করেন, যেখানে তরুণ উদ্যোক্তা ও তাদের স্টার্টআপগুলোকে জায়গা, প্রশিক্ষণ, বিনিয়োগসহ সফল স্টার্টআপ হিসেবে তৈরিতে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি স্টার্টআপে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ সহজ করতে তিনি আমাকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করেন। তার নির্দেশনায় মাত্র তিন মাসের মধ্যে অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট রুল প্রণীত হয়। ছোট ছোট উদ্যোক্তার জন্য স্মল ক্যাপিটাল বোর্ড গঠন করা হয়।
প্রযুক্তিগত প্রজ্ঞার পাশাপাশি ডিজিটাল অর্থনীতি নিয়ে তার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা ও এর বাস্তবায়ন আমরা দেখতে পাই। মধ্যস্বত্বভোগীর দৌরাত্ম্যে আমাদের কৃষক ছিলেন সবসময় অবহেলিত। আজ তারাই ডিজিটাল বাংলাদেশে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে মধ্যস্বত্বভোগীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই কৃষিপণ্য পৌঁছে দিচ্ছেন ভোক্তার দোরগোড়ায়। বর্তমান মহামারির সময়ও ইন্টারনেট, ই-কমার্স ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের কারণে আমরা অনেকেই বাড়িতে থেকেও জীবনযাত্রা সচল রাখতে পেরেছি। এই খাতগুলোর জন্য অবকাঠামো তৈরি, নীতিমালা প্রণয়ন ও ভ্যাট কমিয়ে আনাসহ ২০২৪ সাল পর্যন্ত দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত যে কর অব্যাহতি পাচ্ছে, তার পেছনে সজীব ওয়াজেদের প্রত্যক্ষ অবদান রয়েছে।
আজ ২৭ জুলাই। তার অভিজ্ঞতা ও সাফল্যগাথার ঝুলিতে যোগ হলো আরও একটি বছর। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখার মাধ্যমে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, সেটিকে আরও দুর্বার গতিতে এগিয়ে নিতে দেশে আরও অধিক সময় অবস্থান করে তথ্যপ্রযুক্তি ছাড়াও অন্যান্য ক্ষেত্রে তার সংশ্নিষ্টতা এখন সময়ের দাবি। বেসিস ও আইসিটি ডিভিশনের তথ্যপ্রযুক্তিতে এক বিলিয়ন রপ্তানির ভিশন অর্জনে তিনি যেভাবে আমাদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, কভিড-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতসহ সামগ্রিক ক্ষেত্রে তার সেই নেতৃত্ব আমাদের অত্যন্ত প্রয়োজন। তার হাত ধরে বাংলাদেশে যে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও স্টার্টআপ খাতের সূচনা, সে খাতের সংগঠন ভিসিপিয়াব থেকে আমরা ২০২৫ সালের জন্য একটি ভিশন দিয়েছি। এতে রয়েছে একশ' কোটি ডলারের স্টার্টআপ, এক হাজার কোটি ডলারের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম তৈরি, স্টার্টআপের মাধ্যমে ১০ লাখ মানুষের প্রত্যক্ষ ও ৫০ লাখ মানুষের পরোক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টির পথরেখা।
আমাদের প্রত্যাশা উন্নয়নশীল বিশ্বের ডিজিটাল অর্থনীতি মডেলের রূপকার হিসেবে সজীব ওয়াজেদ শুধু তথ্যপ্রযুক্তি, স্টার্টআপ ও ভেঞ্চার ক্যাপিটালের ভিশনই বাস্তবায়ন করবেন না, তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০৪১ সাল নাগাদ বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। শুভ জন্মদিন!
লেখক: সভাপতি, ভিসিপিয়াব; সাবেক সভাপতি, বেসিস
- ‘প্রধানমন্ত্রীর কথার বাস্তবায়ন হতে দিচ্ছে না বিশেষ মহল’
- শোক হোক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার শক্তি
- জামায়াত গণহত্যার জন্য ক্ষমা চাইছে না: শাহরিয়ার কবির
- ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা
- ঐক্যফ্রন্ট: দলছুট বুড়ো খোকাদের ‘গোল্লাছুট’
- ‘যে পাপ করেছি, তার প্রায়শ্চিত্য করতেই হবে’
- তাদের অবশ্যই নির্বাচনে আসতে হবে: ইকবাল সোবহান চৌধুরী
- সিডও সনদের বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা
- বিএনপির প্রযুক্তি বিরোধিতা নতুন কিছু নয়
- বি. চৌধুরীর কাছে সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজের প্রশ্ন!
- আল্লাহ-রাসুলের পর বঙ্গবন্ধুকে নেতা মানেন খালেদার উপদেষ্টা
- এবার কালো মেয়েকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন তসলিমা নাসরিন
- ইতিহাসের কলঙ্কময় অধ্যায় পিলখানা হত্যাযজ্ঞ
- ‘বিরোধী শিবিরের মেসি হবেন ড. কামাল’
- নির্দিষ্ট পরিমাণের পর সম্পদে অধিকার ঠিক না
‘বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট শিগগির গিনেস বুকে উঠবে’
ডেঙ্গু প্রতিরোধের কর্মসূচি নিয়ে ২২ এপ্রিল মাঠে নামছে ডিএনসিসি
আন্তর্জাতিক নবায়নযোগ্য শক্তি সংস্থার অধিবেশনে সংসদীয় প্রতিনিধিদল
মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন প্রধানমন্ত্রীর
মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা